মিষ্টি_বউ
গল্প,, # মিষ্টি_বউ
---এই
---হুম বলো?
---শুনো না।
---বলো শুনছি।
---টিভি থেকে চোখটা সড়িয়ে আমার
দিকে তাকাবে তো।
---আরে নাহ, দেখছো খোকা কে কীভাবে
তার বউ তাকে বোকা বানাচ্ছে।
----হ্যা ঐ সিরিয়ালের মত যদি তোমাকেও
বোকা বানাতে পারতাম তাহলে শান্তি
পেতাম।
----কেনো তুমি কী অশান্তিতে আছো?
----উহ ইচ্ছা করছে?
----কী ইচ্ছা করছে বাবু?
----চামিচ দিয়ে তোমার মাথাটা ফাটিয়ে দিই?
----তো চামিচ টা কোন হাতে নিবে?
----মানে?
----মাথা যে ফাটাবে তো কোন হাতে
নিয়ে ফাটাবে ডান নাকি বাম হাতে?
----উহহহহ,,,
----কী ছ্যাকা লাগল?
----না তোমার মাথা।
----শোন মাথা পরে ফাটাও, আগে রান্না
শেষ করো খুব হ্মুদা পাইছে।
.
আমি আবীর, আর যার সাথে ঝগড়া করছি
সেটা আবার বউ মেঘা। আমার বউটা খুব
লহ্মি, তাকে রাগানোর জন্য এমনটা করি
মাঝে মাঝে।আমার বউটা রাগলে সেইরকম
লাগে দেখতে।আহামরি সুন্দরী না হলেও
সকল মায়া যেনো আমার বউটার মধ্যেই
আছে।মেঘা খুবই শান্ত প্রকৃতির মেয়ে।তবে
যদি একবার রেগে যায় তাকে সামলানো
অনেক কষ্টের।
.
কিছুহ্মন পর,,,,,,
.
-----তুমি এখনো উঠো নাই?
-----আরে বাবা এখনো শেষ পর্ব দেখবো
তো।
----আমি একটা জিনিস বুঝি না।
----কী জিনিস?
----প্রত্যেক ঘরে মেয়েরা star জলসার নাটক
নিয়ে ব্যস্ত থাকে,কিন্তু আমি মেয়ে হয়ে
এসব পছন্দ করি না।আর তুমি ছেলে হয়ে,,,?
----তো কী ছেলে বলে কী এসব দেখা
যাবেবে না।খোকাবাবু নাটকটা কী সুন্দর।
----আগে যদি জানতাম তোমার star জলসার
নেশা আছে তাহলে কখনোই বিয়ে করতাম
না।
----কিন্তু এখন আর উপায় নেই তোমার।
----বাবা মার উপর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে আমার।
----মারবে নাকি?
----কাকে?
----তোমার বাবা মা কে।
----বাজে কথা বলো না,,শোনো হয় star
জলসা ছাড়বা না হয় আমাকে।
----ছেড়ে দিলাম।
----কাকে?
-----দুটোই।
-----দুটোই মানে?ওহহ বুঝেছি আমাকে তো
ছাড়ার কথা বলতে পারছো না তাই এভাবে
মিন করছো।ওকে আমি চলে যাচ্ছি।তোমার
যখন এতই অসুবিধা হচ্ছে।
-----আরে কী বলি আর কী বুঝে,কোথায় যাও।
কি ব্যাপার ঘরের দরজা দিলো কেন।কিছুই
তো বুঝতেছি না।
.
দশ মিনিট পর,,,,,,
>কি ব্যাপার ব্যাগ নিয়ে কোথায় যাচ্ছো?
>আমার বাবার বাড়ী,তুমি থাকো শান্তি
করে।
>শুনো?
>থাক আমাকে আর কিছু বলতে হবে না।আর
আমাকে আটকানোর চেষ্টা করো না দয়া
করে।
>কিন্তু?
>কিন্তুকিছুই না,আর আটকানোর চেষ্টাও
করো না তাহলে আমি নিজেকে শেষ করে
দিবো।।
- আমি আর মেঘাকে আটকানোর চেষ্টা
করলাম না।কারন ও অনেক রেগে আছে তাই
যাই বলি না কেনো কিছুই হবে না।এই তো
ঝিনাইদহ শহর থেকে মাত্র ১৫ মিনিটের পথ
ওর বাবার বাড়ী।চলেই যেতে পারবে
সম্যসা হবে না।রাগ কমে গেলে এমনিতেই
ঠিক হয়ে যাবে।
.
এখন রাত এগারো টা বাজে,
কি অদ্ভুত ব্যাপার পুরো বাসা খালি খালি
লাগছিল, একজন মানুষ এত টা শূণ্যতা দান
করতে পারে জানা ছিল না।
কেন জানি মন খারাপ হয়ে গেল।
সোজা বিছানায় চলে গেলাম।ঘন্টা
খানেক এপাশ ওপাশ করেও যখন ঘুম এলনা
তখন বুঝলাম মেঘা আমার জন্য কতটা গুরুত্ব
পূর্ণ।
.
বিয়ের আড়াই বছরে ও মনে হয় দুদিন এর
বেশি আমায় ছাড়া থাকেনি।আর আজ
আমি ইচ্ছা করেই ওকে রাগিয়ে
দিলাম,নিজের প্রতি মেজাজ খারাপ হয়ে
গেল।নিজেকে কেমন জানি অপরাধী মনে
হচ্ছে। না একা থাকতে পারব না,মেঘা কে
দরকার।ওকে জড়িয়ে না ধরলে ঘুম আসবেনা।
কথায় আছে দুষ্টু বউ থেকে শূন্য বিছানা
অনেক ভাল।কিন্তু বউটা যদি ভাল হয়
তাহলে তখন শূন্য বিছানাকে খারাপ মনে
হয়।।
.
বেশি রাত হয়নি, তাই শ্বশুরবাড়ি যাওয়া
যেতেই পারে। শার্ট প্যান্ট পরে নিলাম।
নিজের
মাঝে একটা জামাই জামাই ভাব। আগে
নাকি জামাইরা
লুঙ্গি আর পাঞ্জাবী পরে আসত। আমিও
সেটা
করব নাকি ভাবছি।
.
নিজের মাঝে মাঝে একটা জামাই জামাই
ভাব নিয়ে
বেড়িয়ে পরলাম। হাতে মিষ্টির হাড়ি
নেই,গায়ে
পাঞ্জাবী নেই। কিন্তু নিজের মাঝে
জামাই জামাই
ভাব।
.
ঝিনাইদহ শহর টা কেমন শান্ত মনে হচ্ছে।
কিন্তু দিনের বেলায় সম্পূর্ন এর বীপরিতে
রূপ ধারন করে।মাঝে মাঝে কোথা থেকে
যেনো কুকুরের ডাক ভেসে আসছে।
ভালই লাগছে হাটতে তবে বউটা পাশে
থাকলে আরো ভাল হতো।
.
শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে গিয়েই দারোয়ান
জিজ্ঞেস
করল "কোথায় যাবেন? " অন্ধকারে আমার
মুখ
দেখতে না পেরে এটা বলেছিল, সেটা পরে
বুঝতে পারছি। আলোয় আসতেই দারোয়ান
বলল
-আরে জামাই বাবাজি!!
-হ্যা।
-ভেতরে যান।
.
কলিংবেল বাজানোর কিছুক্ষণ পরেই মেঘা
দরজা
খুলে দিল। আমার জন্য হয়ত দরজার সামনে
অপেক্ষা করছিল। একেই বলে ভালবাসার
টান। আমি
দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকলাম। মেঘা
আমার দিকে
তাকিয়ে আছে।
.
কিছুক্ষণ পরে বুঝতে পারলাম এটা
ভালবাসার টান না, এটা
ভাল বাশের টান। তাইত মেঘা ঠাস করে
দরজা
লাগিয়ে দিল। আমি চুপ করে দাঁড়িয়েই
থাকলাম। কি
আর করা!
.
আবার কলিংবেল বাজাতে গিয়ে থেমে
গেলাম।
বুদ্ধি করে মেঘার ছোটবোন নেহার ফোনে
কল দিলাম। দ্বিতীয়বার ফোন ধরে বলল
-কেমন আছেন দুলাভাই?
-ভাল আছি। তুমি কেমন আছ?
-ভালই আছি। আপনি তো আমাদের বাড়িতে
আসা
ভুলেই গিয়েছেন।
-ভুলিনি।
-তাহলে আসেন না কেন?
-আমিত তোমাদের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে
আছি।
-কি!! ভেতরে আসুন।
-দরজা না খুললে কিভাবে আসব!!
-আপনি ওখানেই থাকেন। আমি আসছি।
.
>নেহা এসে দরজার খুলে দিলো।
তারপর আমার শুশুর শাশুড়ীর সাথে ভাল
মন্দ কথা বলে,নেহাকে নিয়ে পাশের
ব্যালকনিতে গিয়ে বললাম তোমার আপু কই।
>আপু তো তার রুমে।
>ওহহ আচ্ছা।
>দুলা ভাই তুমি নাকি আপু সাথে রাগ
করছো তাই আপু চলে আসছে নাকি এখানে।
>না তেমন কিছু না।সব ঠিক হয়ে যাবে।
>তা দুলাভাই কী নিয়ে রাগ করছেন?
>নেহা কে আমি ছোট বোন মনে করি তাই
ওকে সব খুলে বললাম।
>আপু তাইলে রাগ করে ঠিকই করছে।
>তুমিও তোমার আপুর দলে?
>না তো,আমি আমার দুলাভায়ের দলে।
--নেহা তোর দুলাভাই আর তোর আপুকে
খেতে আসতে বল।(শাশুড়ি)
---মা তোমার ঘুমিয়ে পড়,আমরা একসাথে
একটু পরে খাবো।(নেহা)
>যাক একজনকে তো হাতে আনলাম।
নেহার সাথে কথা শেষ করেই মেঘার রুমের
দিকে পা বাড়ালাম আমি আর নেহা।নেহা
আমার পিছন পিছন আসতেছে।
.
---রুমের ভেতর টা কী অন্ধকার।
কেউ কী আছেন রুমে।
কোন সাড়া শব্দ নেই।রুমের লাইটটা জেলে
দিলাম।দেখি মেঘা মুখ ঘুড়িয়ে শুয়ে আছে।
এই মেঘা,,,,,,মেঘা,,,
---তুমি এখানে কেনো আসছো?
কথাটা শুনেই একটু ভয় পেলাম।আর নেহা
তো ভয়তে ভো দৌড় দিল রুম থেকে।আমিও
দিবো নাকি ভাবতেছি।না থাক বউটা
যেহেতু আমার তাই সব আমাকেই করতে
হবে।
---তোমার সাথে শুতে থুক্কু খেতে আসছি।
----মানে?
----মানে বুঝোনা, আমি এখনো খায়নি।
তোমাকে ছাড়া কখনো রাতের খাবার
খাইছি।
----তাহলে দূরে সরিয়ে দিলে কেন?
----কই দূরে সরিয়ে দিলাম?এই তো আমার
মিষ্টি বউয়ের কাছে আসছি।
----হুম,কষ্ট দিয়ে এখন ঢং করতে আসছো।
----সরি আর কখনো করব না মিষ্টি বউটা।এই
তোমার চোখ ফোলা লাগছে কেন?
.
কথাটা বলতে বলতে মেঘা আমাকে জড়িয়ে
ধরে কাঁদতে লাগল।আমিও ওকে পরম আদড়ে
জড়িয়ে নিলাম আমার বুকে।সরি আর কখনো
এমন হবে না।আমার মেঘার চোখ থেকে
মেঘের বুক থেকে যেভাবে পানি ঝড়ে ঠিক
তেমন করে পানি ঝড়ছে।
.
নাহ আমার পাগলীটাকে আর এভাবে কষ্ট
দেয়া যাবে না। এই মেঘা এতো বাচ্চাদের
মত কাদছো কেনো।কাদলে তোমাকে একদম
বাচ্চাদের মত লাগে।
।
--দুলাভাই রোমান্স শেষ হলে খেতে
আসেন।
নাহ এই শালিটার জন্য একটু রোমান্সও করা
যাবে না দেখছি।
.
খাওয়া দাওয়া শেষ করে শালিকা বলে উঠল
--দুলাভাই কাল আমাকে আর আপু নিয়ে
ঘুরতে যাবেন কিন্তু
---ওকে যামুনে টেনশন নিও না।
--থ্যাংইউ দুলাভাই,,,
--হু দুলাভাইকে বাঁশ দিতে পারলেই তো
আনন্দে লাফাতে শুরু করো তুমি,মনে মনে
ভাবলাম কথাটা।
.
রাত ২ টা,,,,
মেঘা পরম শান্তিতে ঘুমিয়ে আছে আমার
বুকে।আমি ওর নিঃশ্বাস টা অনুভব করছি
পারছি,নিজের মনের মধ্যে এক অন্যরকম
শিহরন সৃষ্টি হচ্ছে। যাকে আমি জড়িয়ে
ধরে শুয়ে আছি সে তো আমারই অংশ
আমারই অস্তিত্ব।যাকে ছাড়া আমার
নিঃশ্বাসটাও পড়বে না।
মনে হচ্ছে পৃথীবির সকল সুখ আমার বু্কে
এসে খেলা করছে।এটা আমার ভালবাসার
মিষ্টি একটা বউ।
---এই
---হুম বলো?
---শুনো না।
---বলো শুনছি।
---টিভি থেকে চোখটা সড়িয়ে আমার
দিকে তাকাবে তো।
---আরে নাহ, দেখছো খোকা কে কীভাবে
তার বউ তাকে বোকা বানাচ্ছে।
----হ্যা ঐ সিরিয়ালের মত যদি তোমাকেও
বোকা বানাতে পারতাম তাহলে শান্তি
পেতাম।
----কেনো তুমি কী অশান্তিতে আছো?
----উহ ইচ্ছা করছে?
----কী ইচ্ছা করছে বাবু?
----চামিচ দিয়ে তোমার মাথাটা ফাটিয়ে দিই?
----তো চামিচ টা কোন হাতে নিবে?
----মানে?
----মাথা যে ফাটাবে তো কোন হাতে
নিয়ে ফাটাবে ডান নাকি বাম হাতে?
----উহহহহ,,,
----কী ছ্যাকা লাগল?
----না তোমার মাথা।
----শোন মাথা পরে ফাটাও, আগে রান্না
শেষ করো খুব হ্মুদা পাইছে।
.
আমি আবীর, আর যার সাথে ঝগড়া করছি
সেটা আবার বউ মেঘা। আমার বউটা খুব
লহ্মি, তাকে রাগানোর জন্য এমনটা করি
মাঝে মাঝে।আমার বউটা রাগলে সেইরকম
লাগে দেখতে।আহামরি সুন্দরী না হলেও
সকল মায়া যেনো আমার বউটার মধ্যেই
আছে।মেঘা খুবই শান্ত প্রকৃতির মেয়ে।তবে
যদি একবার রেগে যায় তাকে সামলানো
অনেক কষ্টের।
.
কিছুহ্মন পর,,,,,,
.
-----তুমি এখনো উঠো নাই?
-----আরে বাবা এখনো শেষ পর্ব দেখবো
তো।
----আমি একটা জিনিস বুঝি না।
----কী জিনিস?
----প্রত্যেক ঘরে মেয়েরা star জলসার নাটক
নিয়ে ব্যস্ত থাকে,কিন্তু আমি মেয়ে হয়ে
এসব পছন্দ করি না।আর তুমি ছেলে হয়ে,,,?
----তো কী ছেলে বলে কী এসব দেখা
যাবেবে না।খোকাবাবু নাটকটা কী সুন্দর।
----আগে যদি জানতাম তোমার star জলসার
নেশা আছে তাহলে কখনোই বিয়ে করতাম
না।
----কিন্তু এখন আর উপায় নেই তোমার।
----বাবা মার উপর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে আমার।
----মারবে নাকি?
----কাকে?
----তোমার বাবা মা কে।
----বাজে কথা বলো না,,শোনো হয় star
জলসা ছাড়বা না হয় আমাকে।
----ছেড়ে দিলাম।
----কাকে?
-----দুটোই।
-----দুটোই মানে?ওহহ বুঝেছি আমাকে তো
ছাড়ার কথা বলতে পারছো না তাই এভাবে
মিন করছো।ওকে আমি চলে যাচ্ছি।তোমার
যখন এতই অসুবিধা হচ্ছে।
-----আরে কী বলি আর কী বুঝে,কোথায় যাও।
কি ব্যাপার ঘরের দরজা দিলো কেন।কিছুই
তো বুঝতেছি না।
.
দশ মিনিট পর,,,,,,
>কি ব্যাপার ব্যাগ নিয়ে কোথায় যাচ্ছো?
>আমার বাবার বাড়ী,তুমি থাকো শান্তি
করে।
>শুনো?
>থাক আমাকে আর কিছু বলতে হবে না।আর
আমাকে আটকানোর চেষ্টা করো না দয়া
করে।
>কিন্তু?
>কিন্তুকিছুই না,আর আটকানোর চেষ্টাও
করো না তাহলে আমি নিজেকে শেষ করে
দিবো।।
- আমি আর মেঘাকে আটকানোর চেষ্টা
করলাম না।কারন ও অনেক রেগে আছে তাই
যাই বলি না কেনো কিছুই হবে না।এই তো
ঝিনাইদহ শহর থেকে মাত্র ১৫ মিনিটের পথ
ওর বাবার বাড়ী।চলেই যেতে পারবে
সম্যসা হবে না।রাগ কমে গেলে এমনিতেই
ঠিক হয়ে যাবে।
.
এখন রাত এগারো টা বাজে,
কি অদ্ভুত ব্যাপার পুরো বাসা খালি খালি
লাগছিল, একজন মানুষ এত টা শূণ্যতা দান
করতে পারে জানা ছিল না।
কেন জানি মন খারাপ হয়ে গেল।
সোজা বিছানায় চলে গেলাম।ঘন্টা
খানেক এপাশ ওপাশ করেও যখন ঘুম এলনা
তখন বুঝলাম মেঘা আমার জন্য কতটা গুরুত্ব
পূর্ণ।
.
বিয়ের আড়াই বছরে ও মনে হয় দুদিন এর
বেশি আমায় ছাড়া থাকেনি।আর আজ
আমি ইচ্ছা করেই ওকে রাগিয়ে
দিলাম,নিজের প্রতি মেজাজ খারাপ হয়ে
গেল।নিজেকে কেমন জানি অপরাধী মনে
হচ্ছে। না একা থাকতে পারব না,মেঘা কে
দরকার।ওকে জড়িয়ে না ধরলে ঘুম আসবেনা।
কথায় আছে দুষ্টু বউ থেকে শূন্য বিছানা
অনেক ভাল।কিন্তু বউটা যদি ভাল হয়
তাহলে তখন শূন্য বিছানাকে খারাপ মনে
হয়।।
.
বেশি রাত হয়নি, তাই শ্বশুরবাড়ি যাওয়া
যেতেই পারে। শার্ট প্যান্ট পরে নিলাম।
নিজের
মাঝে একটা জামাই জামাই ভাব। আগে
নাকি জামাইরা
লুঙ্গি আর পাঞ্জাবী পরে আসত। আমিও
সেটা
করব নাকি ভাবছি।
.
নিজের মাঝে মাঝে একটা জামাই জামাই
ভাব নিয়ে
বেড়িয়ে পরলাম। হাতে মিষ্টির হাড়ি
নেই,গায়ে
পাঞ্জাবী নেই। কিন্তু নিজের মাঝে
জামাই জামাই
ভাব।
.
ঝিনাইদহ শহর টা কেমন শান্ত মনে হচ্ছে।
কিন্তু দিনের বেলায় সম্পূর্ন এর বীপরিতে
রূপ ধারন করে।মাঝে মাঝে কোথা থেকে
যেনো কুকুরের ডাক ভেসে আসছে।
ভালই লাগছে হাটতে তবে বউটা পাশে
থাকলে আরো ভাল হতো।
.
শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে গিয়েই দারোয়ান
জিজ্ঞেস
করল "কোথায় যাবেন? " অন্ধকারে আমার
মুখ
দেখতে না পেরে এটা বলেছিল, সেটা পরে
বুঝতে পারছি। আলোয় আসতেই দারোয়ান
বলল
-আরে জামাই বাবাজি!!
-হ্যা।
-ভেতরে যান।
.
কলিংবেল বাজানোর কিছুক্ষণ পরেই মেঘা
দরজা
খুলে দিল। আমার জন্য হয়ত দরজার সামনে
অপেক্ষা করছিল। একেই বলে ভালবাসার
টান। আমি
দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকলাম। মেঘা
আমার দিকে
তাকিয়ে আছে।
.
কিছুক্ষণ পরে বুঝতে পারলাম এটা
ভালবাসার টান না, এটা
ভাল বাশের টান। তাইত মেঘা ঠাস করে
দরজা
লাগিয়ে দিল। আমি চুপ করে দাঁড়িয়েই
থাকলাম। কি
আর করা!
.
আবার কলিংবেল বাজাতে গিয়ে থেমে
গেলাম।
বুদ্ধি করে মেঘার ছোটবোন নেহার ফোনে
কল দিলাম। দ্বিতীয়বার ফোন ধরে বলল
-কেমন আছেন দুলাভাই?
-ভাল আছি। তুমি কেমন আছ?
-ভালই আছি। আপনি তো আমাদের বাড়িতে
আসা
ভুলেই গিয়েছেন।
-ভুলিনি।
-তাহলে আসেন না কেন?
-আমিত তোমাদের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে
আছি।
-কি!! ভেতরে আসুন।
-দরজা না খুললে কিভাবে আসব!!
-আপনি ওখানেই থাকেন। আমি আসছি।
.
>নেহা এসে দরজার খুলে দিলো।
তারপর আমার শুশুর শাশুড়ীর সাথে ভাল
মন্দ কথা বলে,নেহাকে নিয়ে পাশের
ব্যালকনিতে গিয়ে বললাম তোমার আপু কই।
>আপু তো তার রুমে।
>ওহহ আচ্ছা।
>দুলা ভাই তুমি নাকি আপু সাথে রাগ
করছো তাই আপু চলে আসছে নাকি এখানে।
>না তেমন কিছু না।সব ঠিক হয়ে যাবে।
>তা দুলাভাই কী নিয়ে রাগ করছেন?
>নেহা কে আমি ছোট বোন মনে করি তাই
ওকে সব খুলে বললাম।
>আপু তাইলে রাগ করে ঠিকই করছে।
>তুমিও তোমার আপুর দলে?
>না তো,আমি আমার দুলাভায়ের দলে।
--নেহা তোর দুলাভাই আর তোর আপুকে
খেতে আসতে বল।(শাশুড়ি)
---মা তোমার ঘুমিয়ে পড়,আমরা একসাথে
একটু পরে খাবো।(নেহা)
>যাক একজনকে তো হাতে আনলাম।
নেহার সাথে কথা শেষ করেই মেঘার রুমের
দিকে পা বাড়ালাম আমি আর নেহা।নেহা
আমার পিছন পিছন আসতেছে।
.
---রুমের ভেতর টা কী অন্ধকার।
কেউ কী আছেন রুমে।
কোন সাড়া শব্দ নেই।রুমের লাইটটা জেলে
দিলাম।দেখি মেঘা মুখ ঘুড়িয়ে শুয়ে আছে।
এই মেঘা,,,,,,মেঘা,,,
---তুমি এখানে কেনো আসছো?
কথাটা শুনেই একটু ভয় পেলাম।আর নেহা
তো ভয়তে ভো দৌড় দিল রুম থেকে।আমিও
দিবো নাকি ভাবতেছি।না থাক বউটা
যেহেতু আমার তাই সব আমাকেই করতে
হবে।
---তোমার সাথে শুতে থুক্কু খেতে আসছি।
----মানে?
----মানে বুঝোনা, আমি এখনো খায়নি।
তোমাকে ছাড়া কখনো রাতের খাবার
খাইছি।
----তাহলে দূরে সরিয়ে দিলে কেন?
----কই দূরে সরিয়ে দিলাম?এই তো আমার
মিষ্টি বউয়ের কাছে আসছি।
----হুম,কষ্ট দিয়ে এখন ঢং করতে আসছো।
----সরি আর কখনো করব না মিষ্টি বউটা।এই
তোমার চোখ ফোলা লাগছে কেন?
.
কথাটা বলতে বলতে মেঘা আমাকে জড়িয়ে
ধরে কাঁদতে লাগল।আমিও ওকে পরম আদড়ে
জড়িয়ে নিলাম আমার বুকে।সরি আর কখনো
এমন হবে না।আমার মেঘার চোখ থেকে
মেঘের বুক থেকে যেভাবে পানি ঝড়ে ঠিক
তেমন করে পানি ঝড়ছে।
.
নাহ আমার পাগলীটাকে আর এভাবে কষ্ট
দেয়া যাবে না। এই মেঘা এতো বাচ্চাদের
মত কাদছো কেনো।কাদলে তোমাকে একদম
বাচ্চাদের মত লাগে।
।
--দুলাভাই রোমান্স শেষ হলে খেতে
আসেন।
নাহ এই শালিটার জন্য একটু রোমান্সও করা
যাবে না দেখছি।
.
খাওয়া দাওয়া শেষ করে শালিকা বলে উঠল
--দুলাভাই কাল আমাকে আর আপু নিয়ে
ঘুরতে যাবেন কিন্তু
---ওকে যামুনে টেনশন নিও না।
--থ্যাংইউ দুলাভাই,,,
--হু দুলাভাইকে বাঁশ দিতে পারলেই তো
আনন্দে লাফাতে শুরু করো তুমি,মনে মনে
ভাবলাম কথাটা।
.
রাত ২ টা,,,,
মেঘা পরম শান্তিতে ঘুমিয়ে আছে আমার
বুকে।আমি ওর নিঃশ্বাস টা অনুভব করছি
পারছি,নিজের মনের মধ্যে এক অন্যরকম
শিহরন সৃষ্টি হচ্ছে। যাকে আমি জড়িয়ে
ধরে শুয়ে আছি সে তো আমারই অংশ
আমারই অস্তিত্ব।যাকে ছাড়া আমার
নিঃশ্বাসটাও পড়বে না।
মনে হচ্ছে পৃথীবির সকল সুখ আমার বু্কে
এসে খেলা করছে।এটা আমার ভালবাসার
মিষ্টি একটা বউ।
No comments